আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-১ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল। পেনাল্টি থেকে জোড়া গোল করেছেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের পোস্টার বয় নেইমার। একটি করে গোল পেয়েছেন রিচার্লিসন, ফিলিপ কৌতিনিয়ো ও গ্যাব্রিয়েল হেসুস।
সিউলের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে দীর্ঘ সময় পর আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল, প্রতিপক্ষ স্বাগতিক দক্ষিণ কোরিয়া। এশিয়ান ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি হলেও পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের চেয়ে কাগজে-কলমে অনেক পিছিয়ে হিউন-মিন সনের দক্ষিণ কোরিয়া।
ম্যাচের প্রথম বাঁশি থেকেই দুরন্ত শুরুতে স্বাগতিকদের চেপে ধরে সেটাই প্রমাণ করে ব্রাজিল। আগ্রাসী শুরুতে সফলতাও ধরা দেয়।
স্টেডিয়ামের দর্শকরা ঠিকঠাক আসন গ্রহণের আগেই ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার জালে বল পাঠায় ব্রাজিল। রাফিনহার ফ্রি-কিক থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। তবে অফসাইডের কারণে গোলটি টেকেনি।
তবে দারুণ ছন্দে ম্যাচ শুরু করা ব্রাজিলকে বেশি সময় ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি দক্ষিণ কোরিয়া। অফসাইডে গোল বাতিলের মিনিট পাঁচেক পরেই প্রথম গোল পেয়ে যায় সেলেসাওরা।
সপ্তম মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে কোরিয়ার বক্সে ঢুকে ফ্রেডের উদ্দেশ্যে বল বাড়িয়েছিলেন অ্যালেক্স সান্দ্রো। ফ্রেড শট নিয়েছিলেন গোলের লক্ষ্যে, তার সামনে থাকা রিচার্লিসনের পায়ে লেগে বল ঠাঁই পায় জালে। ১-০।
দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার গোল অভিমুখে আক্রমণে আরও ক্ষুরধার হয়ে ওঠে ব্রাজিল। তবে পরিষ্কার কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না তিতের দল। ২৪ মিনিটে বক্সের ভেতর ফাউলের শিকার হয়ে রিচার্লিসন পেনাল্টির জন্য জোরালো আবেদন করেছিলেন, তবে ভিএআর সেই দাবি আমলে নেয়নি।
এরপরই ৩১ মিনিটে অনেকটা ধারার বিপরীতে গোল পেয়ে ম্যাচে ফেরে স্বাগতিকরা। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে ব্রাজিলের বর্ষীয়ান ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভাকে এক প্রকার বিব্রত করেই দলকে সমতায় ফেরান কোরিয়ান স্ট্রাইকার হোয়াং উই-জো। বক্সের ভেতর পাস ধরে সিলভাকে একপাশে রেখে গতিময় শটে ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক ওয়েভারটনকে পরাস্ত করেন এই দক্ষিণ কোরিয়ান।
তবে ম্যাচে ১-১ সমতা বেশিক্ষণ টেকেনি। ৩৯ মিনিটে অ্যালেক্স সান্দ্রো বক্সে ফাউল হন। ভিএআর ম্যাচে ব্রাজিলের প্রথম পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দিলেও এবার আর তাদের হতাশ করেনি। পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদ করে বিরতির আগে সেলেসাওদের এগিয়ে দেন ম্যাচের আগে চোট শঙ্কায় থাকা তারকা ফরোয়ার্ড নেইমার।
বিরতির ১২ মিনিট পর এই গোলেরই যেন অ্যাকশন রিপ্লে দেখা যায়। ফের সান্দ্রো বক্সের মধ্যে ফাউল হন, ফের নেইমার স্পট কিক থেকে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠান। ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।
নেইমারের বদলি হিসেবে নামা কৌতিনিয়ো এরপর স্বাগতিকদের ম্যাচ থেকে পুরোপুরিভাবে ছিটকে দেন। মাঠে নামার মিনিট দুয়েকের মধ্যেই দারুণ দক্ষতায় কোরীয় গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান সদ্য স্থায়ীভাবে বার্সেলোনা থেকে ইংলিশ ক্লাবে অ্যাস্টন ভিলায় যোগ দেওয়া এই উইঙ্গার।
অতিরিক্ত সময়ে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে খেলা ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল হেসুস আরও একবার দক্ষিণ কোরিয়ার জাল কাঁপিয়ে ব্রাজিলের বড় জয় নিশ্চিত করেন।