ঢাকা ০২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডেঙ্গু জ্বর? খাবার গ্রহণ ও ওষুধ সেবনে যা খেয়াল রাখতে হবে

করোনার সাথে তাল মিলিয়েডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। তাই এ সময় সুস্থ থাকাটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে তা সচেতন থাকতে হবে।

সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যথা মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র‍্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।

পুষ্টিবিদদের মতে, ডেঙ্গু হলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। জ্বর হলে অনেকেই খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেন।

এর থেকে হতে পারে পানিশূন্যতা। পাশাপাশি কমে যেতে পারে প্লাটিলেট সংখ্যা। তাই বাড়িতে কারও ডেঙ্গু জ্বর অবশ্যই কয়েকটি খাবার খাওয়ানো জরুরি। জেনে নিন কোন খাবারগুলো খাওয়াবেন ডেঙ্গু রোগীকে-

★ ডালিমে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল। এ সময় ডালিম খেলে বাড়বে প্লেটলেটের সংখ্যা। এই উপকারী ফলটি খেলে ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভূতিও দূর হবে।

★ শারীরিক সুস্থতায় ডাবের পানি অনেক উপকারী। ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরে তরল পদার্থের শূন্যতা থেকে সৃষ্টি হয় ডিহাইড্রেশন। তাই এ সময় বেশি করে ডাবের পানি পান করুন। এতে থাকে ইলেক্ট্রোলাইটসের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি।

★ কমলা বা মালটার রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এ দুটি উপাদান ডেঙ্গু জ্বর নিয়ন্ত্রণে উপকার করে।

★ কিউই ফলেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে এতে থাকে পটাশিয়াম। এ ফল খেলে ইলেক্ট্রোলাইট স্তর এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। সেইসঙ্গে কিউই খেলে শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রাও বৃদ্ধি পায়।

★ রান্নাঘরের একটি উপাদান হলো হলুদ। যা চিকিৎসায় যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ডেঙ্গু জ্বর হলে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করুন। হলুদ দুধ খাওয়ার একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে।

★ মেথি সবার ঘরেই নিশ্চয়ই আছে! ডেঙ্গু হলে অতিরিক্ত মাত্রার জ্বর কমাতে সাহায্য করে এই উপাদানটি। তবে মেথি গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরমার্শ করে নিতে হবে।

★ পালং শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ওমেগো-থ্রি ফ্যাটি এসিড। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করেতে সহায়তা করে এই শাক। পালং শাক গ্রহণে ডেঙ্গু রোগীর প্লেটলেট দ্রুত বাড়বে।

★ ডেঙ্গু হলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করুন। সেইসঙ্গে মসলাযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলতে হবে। এ ছাড়াও ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় খাবেন না। এসব খাবার শরীরের কোনো উপকারেই আসে না বরং ক্লান্তি ও অসুস্থতা বাড়িয়ে দেয়।

যেসব ঔষধ খাওয়া উচিত নয়

ডাক্তারদের মতে, “ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ চারটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে।”

চিকিৎসকরা বলছেন, প্যারাসিটামলের সর্বোচ্চ ডোজ হচ্ছে প্রতিদিন চার গ্রাম। কিন্তু কোন ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

ট্যাগ:-

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন :-

নিউজ বিজয়ের সম্পর্কে

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

ডেঙ্গু জ্বর? খাবার গ্রহণ ও ওষুধ সেবনে যা খেয়াল রাখতে হবে

প্রকাশিত সময়:- ০৬:৫৬:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২

করোনার সাথে তাল মিলিয়েডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। তাই এ সময় সুস্থ থাকাটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে তা সচেতন থাকতে হবে।

সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যথা মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র‍্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।

পুষ্টিবিদদের মতে, ডেঙ্গু হলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। জ্বর হলে অনেকেই খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেন।

এর থেকে হতে পারে পানিশূন্যতা। পাশাপাশি কমে যেতে পারে প্লাটিলেট সংখ্যা। তাই বাড়িতে কারও ডেঙ্গু জ্বর অবশ্যই কয়েকটি খাবার খাওয়ানো জরুরি। জেনে নিন কোন খাবারগুলো খাওয়াবেন ডেঙ্গু রোগীকে-

★ ডালিমে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল। এ সময় ডালিম খেলে বাড়বে প্লেটলেটের সংখ্যা। এই উপকারী ফলটি খেলে ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভূতিও দূর হবে।

★ শারীরিক সুস্থতায় ডাবের পানি অনেক উপকারী। ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরে তরল পদার্থের শূন্যতা থেকে সৃষ্টি হয় ডিহাইড্রেশন। তাই এ সময় বেশি করে ডাবের পানি পান করুন। এতে থাকে ইলেক্ট্রোলাইটসের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি।

★ কমলা বা মালটার রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এ দুটি উপাদান ডেঙ্গু জ্বর নিয়ন্ত্রণে উপকার করে।

★ কিউই ফলেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে এতে থাকে পটাশিয়াম। এ ফল খেলে ইলেক্ট্রোলাইট স্তর এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। সেইসঙ্গে কিউই খেলে শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রাও বৃদ্ধি পায়।

★ রান্নাঘরের একটি উপাদান হলো হলুদ। যা চিকিৎসায় যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ডেঙ্গু জ্বর হলে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করুন। হলুদ দুধ খাওয়ার একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে।

★ মেথি সবার ঘরেই নিশ্চয়ই আছে! ডেঙ্গু হলে অতিরিক্ত মাত্রার জ্বর কমাতে সাহায্য করে এই উপাদানটি। তবে মেথি গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরমার্শ করে নিতে হবে।

★ পালং শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ওমেগো-থ্রি ফ্যাটি এসিড। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করেতে সহায়তা করে এই শাক। পালং শাক গ্রহণে ডেঙ্গু রোগীর প্লেটলেট দ্রুত বাড়বে।

★ ডেঙ্গু হলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করুন। সেইসঙ্গে মসলাযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলতে হবে। এ ছাড়াও ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় খাবেন না। এসব খাবার শরীরের কোনো উপকারেই আসে না বরং ক্লান্তি ও অসুস্থতা বাড়িয়ে দেয়।

যেসব ঔষধ খাওয়া উচিত নয়

ডাক্তারদের মতে, “ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ চারটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে।”

চিকিৎসকরা বলছেন, প্যারাসিটামলের সর্বোচ্চ ডোজ হচ্ছে প্রতিদিন চার গ্রাম। কিন্তু কোন ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।