রংপুরের পীরগাছায় বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মারে আগুন লাগার পর বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করতে গড়িমসি ও গ্রাহক হয়রানীর অভিযোগ উঠছে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর পীরগাছা জোনাল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। শনিবার উপজেলার অনন্তরাম (আমবাড়ী) গ্রামে কিট শব্দে একটি ট্রান্সফর্মারে আগুন ধরে গেলেও বিদ্যুৎ লাইন ব্ধ করতে চাননি এ অফিসের কর্মচারীরা। এতে করে বড় ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটার শংকায় ক্ষুদ্ধ বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।
জানা গেছে, শনিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার অনন্তরাম আমবাড়ী গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের একটি ট্রান্সফর্মারে বিকট শব্দে আগুন লেগে যায়। এই দৃশ্য দেখে লোকজন আতংকিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ফোন দিতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে স্থানীয় দেলওয়ার হোসেন সুমন নামে এক যুবক পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পীরগাছা জোনাল অফিসের হটলাইন নম্বরে ফোন দিয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ করার অনুরোধ করেন। কিন্তু বিদ্যুৎ বন্ধ না করে ওই অফিসের লোকজন বার বার নানা অযুহাত দেখিয়ে তালবাহানা করতে থাকে। বৈদ্যুতিক পিলারের সাথে একটি বাড়ি তালাবদ্ধ। কেউ বাড়িতে নেই। মেইন সুইচ বন্ধ করা যাচ্ছে না। বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বিদ্যুৎ বন্ধ করা জরুরী বললেও কেউ শোনেননি। উত্তরে বলা হয়, বাড়িতে তালা মারা আমরা কি করবো। কতক্ষণ লাইন বন্ধ রাখবো। আপনারা ভিলেজ ইলেক্ট্রিয়ান ডাকেন। মিটিং চলছে, বিদ্যুৎ বন্ধ করা যাবেনা। এ ধরনের নানা কথাবার্তা বলে ৪ মিনিট সময় ক্ষেপন করা হয়। ৪ মিনিটে ৪ ব্যাক্তি কথা বলে নতুন করে অভিযোগকারীর নিকট বিস্তারিত শুনতে চান। এরপর বিদ্যুৎ বন্ধ করা হলে অল্পের জন্য বেঁচে যায় কয়েকটি বাড়িঘর।
অভিযোগকারী সুমন বলেন, বিদ্যুৎ ট্রান্সফর্মারে আগুন লাগলো, ফোন দিলাম, কিন্তু তারা কোন কথাই শুনলো না। নানা ভাবে হয়রানী করলো। তাদের কথাবার্তা মনে হয়, আমরা দেশের কেউ না। বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন যেভাবে বলবে শুনতে হবে। এতে আমি হতবাক হয়েছি। ৪ মিনিট কথোপকথনে তারা ৪/৫ জন আমার সাথে কথা বলেছেন। প্রত্যেকের কাছে ঘটনা নতুন করে বলতে হয়েছে। এটা হয়রানি ছাড়া আর কিছুনা। পল্লী বিদ্যুতের মত জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সেবার মান যদি এই অবস্থা হয়। তাহলে তা খুবই দুঃখজনক।
পীরগাছা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো: নুরুজ্জামান এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও সেট গত দুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে অফিসের কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
এ বিষয়ে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন খাঁন বলেন, আগুন লাগার খবর পাওয়া মাত্র সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে ওই এলাকার বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া। তারপর আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আগুন লাগার খবরে গরিমসি করার কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। শিগগিরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিউজ বিজয় ২৪ডট কম/এফএইচএন