দুটি দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। এটা নিয়ে টানা অষ্টমবারের মতো বাড়ছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির মেয়াদ। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে আবেদনে সাড়া দেয়নি আইন মন্ত্রণালয়। আইন অনুযায়ী তার বিদেশে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আবারও জানানো হয়েছে।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী জানান, আগের দুটি শর্ত- বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং দেশে চিকিৎসা নিতে হবে- সেটা বহাল রেখে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
তবে আইন অনুযায়ী বিএনপি নেত্রীর বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার কোনো সুযোগ জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, আবেদনে বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি ছিল। কিন্তু সে বিষয়ে আইনি কোনো সুযোগ নেই। আইনি সুযোগ থাকলে আমরা বিবেচনা করতাম।
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার চলতি মুক্তির মেয়ার শেষ হবে। সম্প্রতি তার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি এবং চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ আবেদনের বিষয়ে মতামত দিতে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
আইন মন্ত্রণালয় মতামত জানানোয় এখন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানান আনিসুল হক।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়া খালেদা জিয়ার দণ্ড পরে আপিলে দ্বিগুণ হয়। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়। উচ্চ আদালতে জামিন করাতে ব্যর্থ হওয়ার পর খালেদা জিয়ার স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন নিয়ে যান।
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে দুর্নীতির দুই মামলার দণ্ড স্থগিত হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসন ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান। মুক্তির জন্য সে সময় দুটি শর্তের কথা বলা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এগুলো হলো খালেদা জিয়াকে বাসায় চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
২০২১ সালের এপ্রিলে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম শর্তটি আর কার্যকর থাকেনি। তিনি বারবার এভারকেয়ারে যান এবং সেখানে ভর্তি হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন। তবে স্বজনদের আবেদন ও তার দলের নানা কর্মসূচির পরও সরকার বিএনপি নেত্রীকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেয়নি।