কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ফলুয়ার চর নৌঘাট পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ চরম দূর্ভোগে পরেছে দেখার যেন কেউ নেই। রাস্তাটিতে বড় বড় খানাখন্দে যানবাহন চলাচলে ব্যাপক দূভোগ পোহাতে হচ্ছে পথী যাত্রিদে। প্রতিনিয়তে দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারিরা। দীর্ঘদিন থেকে রাস্তাটি সংস্কার না করায় রৌমারী উপজেলা মোড় থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ সংলগ্ন ফলুয়ারচর নৌঘাট পর্যন্ত সম্পর্ণ রাস্তাটি খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। রাস্তাটি কুটিরচর স্কুল এন্ড কলেজ পর্যন্ত পাকা থাকলেও শতশত বালু ভর্তি ট্রাক্টর যাতায়াতে রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। রাস্তাটির প্রস্থ কম থাকায় গত বছর সংস্কারের কথা বলে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুপাশের বসতবাড়ি ভেঙ্গে দেওয়া হয়। বছর খানেক অতিবাহিত হলেও মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কলেজপাড়া, বন্দবেড়, মদাব্যাপারী ঘাট, কুটিরচর, চরবন্দবেড়, বাঘমারা, খানপাড়া, পশ্চিম খঞ্জনমারা, ফলুয়ারচর, পালের চর, বড় চরসহ কুড়িগ্রাম জেলা সদরের সাথে। অপর দিকে উপজেলা মোড় থেকে শাপলা মোড় হয়ে রৌমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজ মোড় পর্যন্ত রাস্তা, নটানপাড়া তুরা রোড উসমান আলী মেম্বারের ডিগির মোড় হতে দক্ষিণে গোয়ালগ্রাম রাস্তা পর্যন্ত পূর্ব ইছাকুড়ি গ্রামের রাস্তাটি অর্ধশতাধিক খানাখন্দ, খঞ্জনমারা হাকিম মোড় থেকে পশ্চিম খঞ্জনমারা ভায়া কুটিরচর স্কুল এন্ড কলেজ পর্যন্ত রাস্তাটিরও বেহাল দশা। ফলে যানবাহন ও পথচারীদের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। দীর্ঘ কয়েক বছর অতিবাহিত হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। রাস্তাটির সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
প্রতিদিন এসব গ্রামের রাস্তা দিয়ে সরকারি ও বেসরকারি চাকুরিজীবি, কোমলমতি শিক্ষার্থী, কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে বিভিন্ন হাট বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস আদালতে যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। পায়ে হেটে গেলে হাটু পর্যন্ত কাদাঁ-ধুলাবালু দিয়ে শরীরের পোশাক পর্যন্ত ময়লা হয়। তারপরেও সংসারের প্রয়োজনের তাগিদে ওই রাস্তাগুলো দিয়ে যেতে হয় প্রতিনিয়ত। রাস্তাগুলো সংস্কারের সময় শুধু বালু মাটি দিয়ে মেরামত করা হয় এবং রাস্তার দুই পাশে স্লোপ না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে অসংখ্য খাদের সৃষ্টি হয়। প্রতি বছর সরকারি বরাদ্দ টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি, এলজিইডিসহ বিভিন্ন প্রকল্প দেওয়া হলেও নাম মাত্র কাজ করে অর্থ আত্মসাত করা হয়। অনিয়ম দূর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক বার অভিযোগ দিলেও কার্যকরি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে কর্মসৃজন কর্মসূচি (মঙ্গা) এর শ্রমিক দিয়ে আইওয়াস করে কিছু কাজ করা হয়।
অটোভ্যান চালক সফিয়ার রহমান বলেন, ভাঙ্গাচুরা রাস্তার কারনে গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করতে পারছি না। আমাদের খুব কষ্ট হয়।
ফলুয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ: সবুর জানান, ফলুয়ার চর রাস্তাটি দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা খুবই কষ্ট করে স্কুলে আসে এমন কি অনেকেই পা পিচলে পড়ে গিয়ে ময়লা পোশাক নিয়ে স্কুলে আর আসতে পারে না। আমি রাস্তাটি মেরামতের দাবী করছি।
স্থানীয় আমিনুল ইসলাম মোল্লা বলেন, রাস্তার অবস্থা বেহালদশা হওয়ায় জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলের মারাত্মক ভাবে ব্যাহত সৃষ্টি হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা চলাচল করছি। রাস্তাটি অতি দ্রুত সংস্কার হলে দূর্ভোগ থেকে আমরা রক্ষা পাবো।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন জানান, সংস্কারের অভাবে রাস্তাগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। দ্রুত সংস্কার করা হলে স্কুল শিক্ষাথীসহ সকল পেশাজীবি মানুষ দূর্ভোগ থেকে রেহাই পাবে।
উপজেলা প্রকৌশলী যুবায়েদ মাহমুদ এর সাথে যোগাযোগের চেষ্ট করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়ক, ফুলয়ার চর নৌঘাটসহ বিভিন্ন রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে জেলা সমন্বয় সভায় আলোচনা করেছি। আশা করি দ্রুত কাজ শুরু হবে।