রংপুরের কাউনিয়ায় শিশু আনজুয়ারার হত্যার সুষ্ঠ বিচার ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও মৌন মিছিল করেছে স্থানীয় লোকজন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের সদর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশ নেয় নিহত আনজুয়ারার বাবার বাড়ির পক্ষের শত শত নারী-পুরুষ। মানববন্ধন শেষে একটি মৌন মিছিল করেন।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে নিহত শিশুটির পিতা আমজাদ হোসেন বলেন, তার শিশু মেয়েকে নির্মমভাবে যারা হত্যা করেছে তারা এলাকায় প্রকাশ্য ঘুরে বেরাচ্ছে। মেয়ের হত্যার সুষ্ঠ বিচার চাইতে গেলে আসামীরা নানা ভাবে হুকমী দিচ্ছে। নিহত শিশুটির মা আবেদা বেগম বলেন, যারা আমার অবুঝ শিশু মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, সুষ্ঠ বিচারের মাধ্যমে তাদের ফাঁসির দাবী জানাই। প্রতিবেশী সন্ত্রাসীরা এভাবে যেন কোন মায়ের বুক খালি করতে না পারে। নিহত শিশুটির চাচা সিনবাদ বলেন, আসামীরা প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আমাদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমাদেরকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করার হুমকীও দিচ্ছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা টেপামধুপুর ইউনিয়নের বিশ্বনাথ গ্রামের আব্দুল হামিজের বসতভিটার কিছু অংশ প্রতিবেশী সাবেক মেম্বার আব্দুল হাকিম নিজের দাবি করে গত এক মাস আগে সীমানা নির্ধারণ করেন। সীমানা নির্ধারনে বিরোধের জের ধরে গত ৯ মে বিকেলে উভয় পক্ষ বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে হাকিম তার লোকজনেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুল হামিজ এবং তার দুইছেলে আমজাদ ও সিনবাদ সহ লোকজনের উপর হামলা করে। এসময় শিশু আনজুয়ারা তার পিতা আমজাদ হোসনকে বাঁচাতে তাকে জড়িয়ে ধরলে হাকিম তার লোকজনেরা শিশুটির মাথায় আঘাত করে। এতে শিশুটি গুরুত্বর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১২ মে বৃহস্পতিবার ভোরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান বলেন, মারপিটের ঘটনায় গত ৯ মে কাউনিয়া থানায় ১৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা হয়েছে। মামলার সব আসামী জামিনে আসার পর হামলায় আহত শিশুটি মারা যায়। আমরা ইতিমধ্যে মামলায় অভিযুক্ত সব আসামীদের জামিন বাতিলের জন্য আদালতে আবেদন করেছি। এছাড়া তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।