ঢাকা ০৪:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স

 
   NewsBijoy24.Com সর্বশেষ খবর পেতে টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন।

মহামারি করোনার কারণে দেশে ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের অনেকেই গত বছর দেশে ঈদ উদযাপন করতে পারলেও এবার আর সেই সুযোগ পাননি। বিদেশে থেকে এসব প্রবাসী দেশে রেখে যাওয়া পরিবার-পরিজনদের ঈদ উদযাপনে পাঠাচ্ছেন টাকা; যা রেমিট্যান্স নামে সবাই চেনে। এই রেমিট্যান্স আবার দেশের অর্থনীতির প্রধান তিনটি স্তম্ভের একটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এপ্রিল মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত ১৮২ কোটি ২০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

সর্বশেষ গত মার্চে ১৮৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন তারা, যা ছিল গত আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সেই হিসাবে এপ্রিল মাসে মার্চের তুলনায় রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭-৮ শতাংশ।

রেমিট্যান্স প্রবাহের এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে এপ্রিল মাস শেষে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার বা ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, এবারের ঈদের ছুটির সঙ্গে মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি পড়ে যাওয়ায় লম্বা ছুটি পেয়েছেন কর্মকর্তারা। এ কারণে এপ্রিলের পুরো মাসের রেমিট্যান্সের তথ্য ঈদের পর ছাড়া পাওয়া যাবে না।

তবে গত বছরগুলোর ঈদকেন্দ্রিক রেমিট্যান্স পাঠানোর ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদের আগের প্রত্যাশিত ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সকে খুব বেশিও বলা চলে না।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসের (জুলাই-মার্চ) হিসাবে এখনো নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে রেমিট্যান্স। এই সময়ে ১ হাজার ৫৩০ কোটি (১৫.৩০ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৮৫৯ কোটি ৮২ লাখ (১৮.৫৯ বিলিয়ন) ডলার; অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় এবারের ৯ মাসে রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ।

তা ছাড়া গত বছর মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে রোজার ঈদ পালিত হয়। ফলে এপ্রিল এবং মে উভয় মাসেই রেমিট্যান্স বেড়েছিল। এবার ঈদের আগে পুরো এক মাসে রেমিট্যান্স পাঠাতে পেরেছেন প্রবাসীরা। কিন্তু সেই তুলনায় রেমিট্যান্স কমই এসেছে। গত বছর এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, মে মাসে এসেছিল ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।

করোনার আগের বছরগুলোতেও ঈদের আগে আরো রেমিট্যান্স বাড়তে দেখা গেছে। ২০১৯ সালের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে রোজার ঈদ পালিত হয়, এর আগের মাস মেতে রেমিট্যান্স ৩৭ শতাংশ বেড়ে ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ ডলারে উন্নীত হয়।

২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর প্রথম দিকে রেমিট্যান্সপ্রবাহে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও মহামারির মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন দেখা যায়। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা; যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

কিন্তু চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা দেখা যায়। প্রথম মাস জুলাইয়ে আসে ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার। আগস্টে আসে ১৮১ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে আসে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। অক্টোবরে আসে ১৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। নভেম্বরে আসে আরও কম, ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।

টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেড়েছিল অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে ফের হোঁচট খায়। ওই মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তার আগের দুই মাস ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এসেছিল যথাক্রমে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ ও ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।

দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা সোয়া কোটি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ। দেশের জিডিপিতে সব মিলিয়ে রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো।

রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিয়ে আসছিল সরকার। গত জানুয়ারি থেকে তা বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে; অর্থাৎ কোনো প্রবাসী এখন ১০০ টাকা দেশে পাঠালে যার নামে পাঠাচ্ছেন, তিনি ১০২ টাকা ৫০ পয়সা তুলতে পারছেন।

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান রুহুল কবির রিজভীর

ঈদে বেড়েছে রেমিট্যান্স

প্রকাশিত সময় :- ০৪:১৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মে ২০২২
 
   NewsBijoy24.Com সর্বশেষ খবর পেতে টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন।

মহামারি করোনার কারণে দেশে ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের অনেকেই গত বছর দেশে ঈদ উদযাপন করতে পারলেও এবার আর সেই সুযোগ পাননি। বিদেশে থেকে এসব প্রবাসী দেশে রেখে যাওয়া পরিবার-পরিজনদের ঈদ উদযাপনে পাঠাচ্ছেন টাকা; যা রেমিট্যান্স নামে সবাই চেনে। এই রেমিট্যান্স আবার দেশের অর্থনীতির প্রধান তিনটি স্তম্ভের একটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এপ্রিল মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত ১৮২ কোটি ২০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

সর্বশেষ গত মার্চে ১৮৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন তারা, যা ছিল গত আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সেই হিসাবে এপ্রিল মাসে মার্চের তুলনায় রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭-৮ শতাংশ।

রেমিট্যান্স প্রবাহের এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে এপ্রিল মাস শেষে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার বা ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, এবারের ঈদের ছুটির সঙ্গে মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি পড়ে যাওয়ায় লম্বা ছুটি পেয়েছেন কর্মকর্তারা। এ কারণে এপ্রিলের পুরো মাসের রেমিট্যান্সের তথ্য ঈদের পর ছাড়া পাওয়া যাবে না।

তবে গত বছরগুলোর ঈদকেন্দ্রিক রেমিট্যান্স পাঠানোর ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদের আগের প্রত্যাশিত ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সকে খুব বেশিও বলা চলে না।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসের (জুলাই-মার্চ) হিসাবে এখনো নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে রেমিট্যান্স। এই সময়ে ১ হাজার ৫৩০ কোটি (১৫.৩০ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৮৫৯ কোটি ৮২ লাখ (১৮.৫৯ বিলিয়ন) ডলার; অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় এবারের ৯ মাসে রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ।

তা ছাড়া গত বছর মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে রোজার ঈদ পালিত হয়। ফলে এপ্রিল এবং মে উভয় মাসেই রেমিট্যান্স বেড়েছিল। এবার ঈদের আগে পুরো এক মাসে রেমিট্যান্স পাঠাতে পেরেছেন প্রবাসীরা। কিন্তু সেই তুলনায় রেমিট্যান্স কমই এসেছে। গত বছর এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, মে মাসে এসেছিল ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।

করোনার আগের বছরগুলোতেও ঈদের আগে আরো রেমিট্যান্স বাড়তে দেখা গেছে। ২০১৯ সালের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে রোজার ঈদ পালিত হয়, এর আগের মাস মেতে রেমিট্যান্স ৩৭ শতাংশ বেড়ে ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ ডলারে উন্নীত হয়।

২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর প্রথম দিকে রেমিট্যান্সপ্রবাহে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও মহামারির মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন দেখা যায়। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা; যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

কিন্তু চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা দেখা যায়। প্রথম মাস জুলাইয়ে আসে ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার। আগস্টে আসে ১৮১ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে আসে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। অক্টোবরে আসে ১৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। নভেম্বরে আসে আরও কম, ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।

টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেড়েছিল অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে ফের হোঁচট খায়। ওই মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তার আগের দুই মাস ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এসেছিল যথাক্রমে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ ও ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।

দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা সোয়া কোটি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ। দেশের জিডিপিতে সব মিলিয়ে রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো।

রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিয়ে আসছিল সরকার। গত জানুয়ারি থেকে তা বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে; অর্থাৎ কোনো প্রবাসী এখন ১০০ টাকা দেশে পাঠালে যার নামে পাঠাচ্ছেন, তিনি ১০২ টাকা ৫০ পয়সা তুলতে পারছেন।