বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষা কার্ড না পাওয়ার অভিযোগ এনে অনশন করেন ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী জোবেদা আক্তার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার সাথে প্রমাণসহ (ক্ষুদে বার্তা, মুঠোফোনে কল দেয়া এবং ডাকযোগের মাধ্যমে তাকে পরীক্ষার জন্য জানানো হয়েছে) কথা বলার এক পর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে স্বামীর সাথে কথা বলব, একটু বাইরে থেকে আসতেছি, এই কথা বলেই কক্ষ থেকে পালিয়ে যান জোবেদা।
জানা যায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে তার প্রেক্ষিতে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক পদে আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী জোবেদা আক্তার। তবে বাকি সব প্রার্থীদের পরীক্ষা গত ২১ সেপ্টেম্বর নিলেও তাকে জানানো হয়নি এমন অভিযোগ এনে রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রশাসনিক ভবনের সিঁড়িতে অনশনে বসেন তিনি। অনশনের খবর পাওয়া মাত্রই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হয়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র পরামর্শ দপ্তরের পরিচালক ঘটনাস্থলে যান এবং জোবেদার সাথে কথা বলেন। কথা বলার জন্য প্রক্টররের কক্ষে বসেন তারা।
ক্ষুদে বার্তা, মুঠোফোনে কল দেয়া এবং ডাকযোগের মাধ্যমে তাকে পরীক্ষার কথা জানানো হয়েছে এমন সমস্ত প্রমাণ দেখায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আলোচনার এক পর্যায়ে সে ভুল স্বীকার করে এবং লিখিত আকারে ক্ষমা চাওয়ার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন। সে এসব করতে চায়নি তাকে ইন্ধন দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে কার ইন্ধনে এমন করেছে সেটা বলতে রাজি হয়নি জোবেদা। কথাবার্তার এক পর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে স্বামীর সাথে কথা বলব, একটু বাইরে থেকে আসতেছি, এই কথা বলেই কক্ষ থেকে পালিয়ে যান জোবেদা। দীর্ঘক্ষণ (জোবেদা) রুমে না আসলে প্রশাসন তাকে আশেপাশে খোঁজ করে কিন্তু ক্যাম্পাসের কোথাও তাকে আর পাওয়া যায়নি। পরে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে দিনভর মিথ্যা-বানোয়াট নাটকীয়তার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস অস্থীতিশীল করার ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দেয়ার আহবান জানিয়ে এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অস্থিতিশীলকারীদের রুখে দাও ছাত্র সমাজ! সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ সবসময় রুখে দাঁড়াবে।’ আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় যখন ক্যাম্পাস ভালো চলছে। তখন কিছু মানুষের বদহজম হয়েছে। তারা চায়না ক্যাম্পাস ভালো চলুক। ক্যাম্পাস স্থিতিশীল থাকুক।
সরকারদলীয় ছাত্রনেতারা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে বিশেষ একটি দলের লোকজন বিভিন্ন বানোয়াট ইস্যু তৈরি করে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। বর্তমান প্রশাসনের বিরোধী গুটি কয়েক শিক্ষকের গোপন মদদে তারা এসব কাজ করে যাচ্ছেন। মূলত নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাসে ঝামেলা সৃষ্টি করাই তাদের উদ্যেশ্য।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জোবেদা আক্তারের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, জোবেদা মেয়েটি প্রক্টর অফিসে এসে কান্নাকাটি করে তার ভুল বুঝতে পেরে আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। কারো ইন্ধন আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, জোবেদা আমাদের জানায় বন্ধু-বান্ধবদের প্ররোচনায় সে এমন করেছে।