অবৈধ ইটভাটা বন্ধে দেওয়া নির্দেশ বাস্তবায়ন না করায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের ব্যাখ্যা চেয়েছে হাই কোর্ট।
হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবি এর একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৫ মে) বিচারপতি জে. বি. এম. হাসান এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
সারা দেশে ইটভাটা বন্ধে জনস্বার্থে এইচআরপিবি রিট আবেদনটি করে বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন“এইচআরপিবি রিট আবেদন করলে আদালত রুল জারি করে এবং অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় এইচআরপিবি একটি আবেদন করলে আদালত রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারকে আদালতের আদেশ মত পদক্ষেপ গ্রহণ করে ‘কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট’ দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে।”
রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ জাকির হোসেন আদালতে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট জমা দিয়ে উল্লেখ করেন যে, তার বিভাগে ৮১২টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। আদালতের আদেশ অনুসারে ১৮টি বন্ধ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে শুনানিতে এই আইনজীবী বলেন, গাইবান্ধার ডিসি ১৫৫টি অবৈধ ইট ভাটার মধ্যে একটিও বন্ধ করেননি, কুড়িগ্রামের ডিসি ৮৬টির মধ্যে ৭টি, দিনাজপুরের ডিসি ১৭৫টির মধ্যে ১০টি, পঞ্চগড়ের ডিসি ২৪টির মধ্যে একটি ইট ভাটা বন্ধ করেছেন। বিভাগীয় কমিশনারের রিপোর্ট তুলে ধরে তিনি বলেন, “মাত্র ১৮টি ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে, যা আদালতের নির্দেশনা অমান্যের শামিল।”
সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় কমিশনারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান এই আইনজীবী।
সাংবাদিকদের মনজিল মোরসেদ বলেন, “শুনানি শেষে আদালত রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারকে আদালতের নির্দেশনার বাস্তবায়নের ব্যর্থতার কারণ আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন।
আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন যে, বিভাগীয় কমিশনার আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত পদক্ষেপ সম্পর্কে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন।”
পরবর্তী শুনানি আগামী ৩০ মে নির্ধারণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনকারী হলেন আইনজীবী ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, এখলাস উদ্দিন ভুঁইয়া ও সঞ্জয় মন্ডল।
রিটে বিবাদীরা হলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব, সব বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারসহ ২১ জন।
শুনানিতে মনজিল মোরসেদকে সহায়তা করেন সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কালিপদ মৃধা।
মোঃ নজরুল ইসলাম/নিবি