
লালমনিরহাটের উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষের লং ড্রাইভের অনৈতিক প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় ইংরেজি বিভাগের প্রভাষককে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী প্রভাষক এস তাবাসসুম রায়হান মূসতাযীর তামান্না।
বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে জেলা শহরের মুনস্টার চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী প্রভাষক বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যোগদান করেন বর্তমান উত্তরবাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকার। এর অল্প কিছুদিন পরে ২০২২ সালের মার্চে নতুন অধ্যক্ষ মহোদয় আমাকে বলেন, আপনার সংসার কিভাবে চলে কিভাবে চলে? আপনার পরিবারে কে কে আছে? আমার গাড়ি আছে, আপনি আমার সাথে গাড়িতে লং ড্রাইভে যেতে পারেন। আমার গাড়িতে কলেজে আসা যাওয়া করতে পারেন, আপনার যেকোনো সমস্যা আমাকে বলতে পারেন, আমি আপনাকে কোথায় নিয়ে যাই দেখবেন, ইত্যাদি। এগুলোর কোনোটি আমার কাছে নীতিগতভাবে সঠিক মনে না হওয়ায় আমি কলেজের যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট ই-মেইলের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনে অবগত করি। এর পর আমাকে ৭ মে হতে ১৯ মে পর্যন্ত কলেজে অনুপস্থিতির থাকায় এবং ক্লাস না নেয়ার ভিত্তিহীন অভিযোগে একটি কারণ দর্শানোর পত্র দেয়া হয়। এবং কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব প্রদান করি।
তিনি বলেন, আমার বকেয়া বেতন ১ লক্ষ তেইশ হাজার তিনশত পঁচিশ টাকা প্রদানের জন্য অধ্যক্ষ বরাবর একটি আবেদন করি। এই আবেদনের কোনো সুরাহা না করে পরবর্তীতে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অভিযোগ সম্বলিত একটি সতর্কীকরণ নোটিশ আমাকে প্রদান করা হয়। এরপরে অনার্স মাস্টার্স কোর্সের ৩৯ জন শিক্ষক পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত একটি আবেদন অধ্যক্ষ বরাবর করা হয়। শিক্ষকরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করাকালীন উক্ত শিক্ষকবৃন্দকে বিভিন্নভাবে হুমকি এবং চাকরীচ্যুত হুমকি প্রদান করা হয়। কর্মসূচি চলাকালীন অধ্যক্ষের নির্দেশে কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক ও কর্মচারীর সেখানে উপস্থিত হয়ে হুমকি-ধামকি প্রদান করে।
অনৈতিক প্রস্তাব এবং মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুর মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর বরাবর আবেদন করি। এগুলোর কোন সুরহা না হতেই আমার অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হওয়ার আগেই কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বরখাস্ত করার একটি চিঠি প্রদান করা হয়।
সাময়িক বরখাস্ত করার আগে আমাকে নিয়মানুযায়ী কোন কারন দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়নি৷ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি৷ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করা হয়নি৷ আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ দেওয়া হয়নি৷ যা বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকুরিবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
অনৈতিক প্রস্তাব এবং এর প্রেক্ষিতে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি যথাযথ কতৃপক্ষের নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে তিনি বলেন, আমি আমার প্রান প্রিয় শিক্ষার্থীদের মির্স করছি, মির্স করছি আমার ক্লাস রুমকে, মির্স করছি আমার প্রিয় সহকর্মীদের, আপনারা আমাকে ন্যায়বিচার পেতে সাহায্য করুন।
এসব অনৈতিক প্রস্তাবের বিষয়ে কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকার বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সব ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত । বরখাস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গভর্নিং বডির এক কর্মকর্তা ও সিনিয়র শিক্ষক তার বিষয়ে আবেদন করেছে। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে গভর্নিং বডি এক মিটিংয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার সুযোগ রয়েছে গভর্নিং বডির মিটিংয়ে যদি এর সঠিক জবাব দিতে পারে তাহলে বিষয়টি গভর্নিং বডি দেখবে।